ঢাকা, ১৪ আগস্ট- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর বেসরকারি হাসপাতালের নিবন্ধনের জন্য যে লাইসেন্স ফি নির্ধারন করেছে সেটি বেশি, যা চাঁদাবাজির পর্যায়ে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ী ছাড়া এত বিপুল পরিমাণ ফি কারো পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতের অবস্থা ভীষণ খারাপ। তারা ভুল পথে হাঁটছে। সেখানে শুধু টাকা ছাড় করা হয়। কিন্তু কোনো কাজ হয় না। ভালো স্বাস্থ্যসেবার জন্য অনেক টাকা দরকার নেই। কিন্তু সব কাজ সঠিকভাবে পরিচালিত হতে হবে। সরকারের উচিৎ সেবামূল্য জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে আছে কিনা সেটি নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, চাইনিজ ভ্যাক্সিন ট্রায়ালের কেন অনুমতি দেয়া হল না, তার কোনো যুক্তি নেই। কিছু অপযুক্তি থাকতে পারে। দেশের স্বার্থে, দেশের মানুষের স্বার্থে চাইনিজ ভ্যাক্সিন ট্রায়ালের অনুমতি দেয়া উচিৎ ছিল।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, সরকারি হাসপাতালে কোটি টাকা মূল্যেও বিপুল পরিমাণ যন্ত্রপাতি রয়েছে যেগুলো ব্যবহার হয় না। ঢাকা মেডিকেলে একাধিক সিটিস্ক্যান মেশিন থাকলেও সেগুলোর সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। এর সঙ্গে কমিশন বাণিজ্য জড়িত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহার করতে হবে। যাতে সেগুলো মানুষের কাজে আসে। মানুষকে যেন বেসরকারি ক্লিনিকে পরীক্ষা করাতে যেতে না হয়। তাহলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ব্যয় অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতে নতুন তিনটি শর্ত
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসক থাকতে হবে। চিকিৎসক থাকলে মানুষ সেবা পাবে। এ জন্য যা করার সেটি করতে হবে। ভালো স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য অনেক টাকার দরকার নেই বা অনেক কিছুর দরকার নেই। দরকার চিকিৎসকদের আন্তরিকতা। সেজন্য চিকিৎসকদের হাসপাতালে থাকতে হবে, সার্বক্ষণিক থাকতে হবে।
তিনি জানান, এবার বেসরকারি পর্যায়ে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এই কার্যক্রম শুরু হবে। নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে যে কেউ এই সেবা নিতে পারবে। গণস্বাস্থ্যের স্বাস্থ্য বীমা করা থাকলে ফি দিতে হবে ২ হাজার টাকা, আর না থাকলে ২৫০০ টাকা। এ ছাড়া ১৫ আগস্ট উপলক্ষে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণে শনিবার হাসপাতালেই চালু হচ্ছে প্লাজমা সেন্টার। এখন থেকে সেখানে গিয়ে যে কেউ প্লাজমা দিতে পারবেন।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, প্লাজমা হল সাপের খোলস বদলানোর মতো। ট্রান্সফিউশন সেট ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষাসহ করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা পেতে ব্যয় হবে সাড়ে তিন থেকে ৪ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, এটি একটি স্থায়ী প্লাজমা সেন্টার যেখানে রক্তের সব ফ্যাক্ট ও সেল পৃথক করে প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ করা হবে। এই সেন্টারে প্লাজমা গ্রহণের ক্ষেত্রে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। সূত্র : যুগান্তর
পাঠকের মতামত: